আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়ার উপায়
আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়ার উপায় গুলো হলো আমাদের পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে হবে, ব্যক্তিগত ঈমান, তাকওয়া আমল করতে হবে। নিয়মিত ইবাদত, কুরআন পাঠ, অন্যদের সাহায্য করা,দান করা, এবং আগের পুরনো কোন পাপ বা মিথ্যেবাদী আচরণ করলে তওবা করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিজের ভুলকে সঠিক করা।
আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়ার উপায় গুলো একটি পূর্ণ আদর্শ ও ধার্মিক জীবনযাত্রার একটি অংশ। সুন্দরভাবে জীবন যাপন পালন করতে এই উপায় গুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই গুণগুলো যাদের মধ্যে আছে তারা হলো আদর্শপূর্ণ মানুষ, এদেরকে আল্লাহ খুব ভালবাসেন।
পোস্ট সূচিপত্র ঃ আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়ার উপায়
আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়ার উপায়
আল্লাহ তালার সৃষ্টির মধ্যে শ্রেষ্ঠ জীব হলো মানুষ , মানুষের মধ্যে যে ব্যক্তিটি আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়ার উপায় এর যোগ্যতা অর্জন করে তার মত সৌভাগ্যবান আর এই পৃথিবীতে কেউ নেই। আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়ার উপায় গুলো হলঃ প্রতিনিয়ত আল্লাহর ইবাদত করতে হবে, পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে হবে , কাউকে গালিগালাজ করা যাবে না , মিথ্যা কথা বলা যাবে না , সিয়াম পালন করতে হবে ।
ঠিকমতো যাকাত বন্টন করতে হবে , সুদ ঘুষ খাওয়া যাবেনা , আপনি কোনদিন কোন পাপ করে থাকলে আল্লাহর কাছ তওবা করতে হবে।কোন ধরনের পাপ কাজ করা যাবে না , মহান আল্লাহ তাআলা এবং প্রিয় নবী ও রাসুল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম এর দেখানো পথ অনুসারে চলতে হবে, মহান আল্লাহতালা ও প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম এর নির্দেশনা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করতে হবে।
গোপনে পাপ করে থাকলে আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে কারণ তওবা কারী কে আল্লাহতালা খুব পছন্দ করে । আপনি যখন বুঝতে পারবেন আপনার দ্বারা কোন পাপ কাজ হয়েছে তাহলে সাথে সাথে তওবা করতে হবে । তওবা করে ওই কাছ থেকে ফিরে আসতে হবে ভুলেও ওই কাজ পুনরায় কোনদিন করা যাবে না । এই আমলগুলো যে ব্যক্তি আমল করতে পারবে সেই ব্যক্তি আল্লাহর প্রিয় বান্দা । এইসব আমলগুলো আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়ার উপায় ।
আল্লাহর প্রিয় জিকির
আল্লাহর জন্য সবচেয়ে প্রিয় জিকির হলো তার নামের জিকির, "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ"। মহান আল্লাহতালা তার বান্দাদের জন্য সারাক্ষণ নেক আমলের সুযোগ দিয়েছে। আল্লাহর প্রেমিকরা আল্লাহর জিকিরের সাড়া দিয়ে সর্বক্ষণ অন্তরে আল্লাহর নাম স্মরণ করে। আল্লাহকে অধিকবার স্মরণ মধ্য দিয়ে যে কেউ কি আমাদের দিন আল্লাহ সবচেয়ে নিকটতম দের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যেতে পারে ।আল্লাহতালার নৈকট্য লাভের জন্য অসংখ্য জিকির ও দোয়া রয়েছে । “সুব হা-নাল্লাহ” , “আল-হামদুলিল্লাহ্” , “লা-ইলাহ ইল্লাল্লা-হ” , “আল্লাহু আকবার” এগুলো হলো জিকির ।
এই জিকিরগুলো একসাথে এবং আলাদা আলাদা ভাবে বলা যায়। মহান আল্লাহ তাআলার রাসুল (সঃ) যিকিরের গুরুত্ব উপলব্ধি করে সকল অবস্থায়ই আল্লাহর যিকির করতেন। জিকিরে অনেক নেকি রয়েছে, সব সময় আল্লাহর জিকির করার নির্দেশ দিয়ে মহান আল্লাহতালা বলেন তোমার প্রতিপালকে মনে মনে সবিনয় ও সশঙ্কচিত্তে অনুচ্চ স্বরে প্রত্যয়ে ও সন্ধ্যায় স্মরণ করবে এবং তুমি উদাসীন হবে না।”(সুরা তহা,আয়াত, ১৪)।
আল্লাহর প্রিয় সূরা
আল্লাহর প্রিয় সূরা হল সূরা আর রহমান । সূরা আর রহমান আল্লাহর প্রিয় সূরা, যে সূরা স্বয়ং আল্লাহ তেলাওয়াত করেছেন। সূরা আর-রহমান সূরাটি কোরানের ৫৫ নম্বর সূরা। এই সূরা কোরআনের 114 সূরা মধ্যে একটি এবং এটিতে ৭৮ আয়াত (ভারমুক্ত লাইন) রয়েছে। "আর-রহমান" এর অর্থ "অত্যন্ত দয়ালু" বা "অত্যন্ত মেহেরবান"। এই সূরা করুণাময় প্রস্তাবনা বোঝায় , এই সূরা থেকে মানুষের উপর আল্লাহর করুণা এবং প্রেমের বাণী প্রকাশ হয়।
এই সূরার আয়াতে মূলভাবে আল্লাহর অসীম দয়া, মহৎ সৃষ্টি, মানুষের উপর প্রদত্ত নেয়ার করুণা, জীবনের গুরুত্ব, জীবনের নীতিমালা এবং আল্লাহর আদেশের গুরুত্ব বিষয়ে বলা হয়েছে। এটি একটি কার্যত করুণাময় বোঝাতে সহায়ক এবং উপকারী সংবাদ। যা মানুষের মধ্যে সম্পর্ক এবং ভালোবাসার উপর প্রকাশ করে।
আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়ার দোয়া
বান্দাদের পাপের পাল্লা যত হালকা হয়ে যাবে তত আল্লাহ তায়ালার কাছের মানুষে পরিণত হবেন। পবিত্র আল কোরআনে অল্লাহ তায়ালা বলেন, 'যে ব্যক্তি তার জুলুমের পর আল্লাহ তায়ালার কাছে তাওবা করে আর নিজেকে শুধরে নেবে, আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই তার প্রতি দয়া করবেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আল্লাহতালা তওবা কারীকে খুব পছন্দ করে।কোন বান্দা যদি ভুল করে কোন পাপ করে থাকে তারপরে সে ভুল বুঝতে পেরে আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত হয়ে তওবা করে ফিরে আসলে আল্লাহতালা খুব খুশি হন।
আল্লাহ তালার প্রিয় বান্দা হওয়ার দোয়া মধ্যে তওবা অন্যতম । আপনারা যদি কোন খারাপ কাজ করে থাকেন তাহলে আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে।
আল্লাহর প্রিয় নাম
আল্লাহর প্রিয় নাম হলো 'আবদুল্লাহ' ও আবদুর রহমান'। এই সূরাগুলোর মধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে আল্লাহ ইসলামের বিশ্বমান্য একমাত্র আল্লাহ ও তার গুণের প্রকাশকারী এবং নূরের কারণ, মহান, দয়ালু, ক্ষমাশীল, সকলকিছুর মধ্যেই সম্ভব সর্বাধিক মহান। 'আবদুল্লাহ' ও 'আবদুর রহমান' নামগুলি তার প্রশংসার মাধ্যমে আল্লাহর দয়ালুতা ও বান্দাগির মহিমা উপস্থাপন করে।
আল্লাহর প্রিয় কাজ
আমরা সব সময় আল্লাহর প্রিয় বান্দা হতে চাই কিন্তু আল্লাহর প্রিয় বান্দা হতে গেলে আল্লাহর প্রিয় কাজগুলো করতে হবে । আল্লাহর কাজ গুলো পালন করতে হবে এবং আমল করতে হবে মহান আল্লাহ তাআলার প্রিয় কাজগুলো সঠিকভাবে করতে হয়। আল্লাহর কাছে পছন্দের কাজ কোনগুলো , তা জানা গেছে বুখারি শরিফের হাদিসে। আল্লাহর প্রিয় কাজগুলো যেমন ঠিকমতো পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে হবে, বাবা মায়ের সাথে ভালো ব্যবহার করতে হবে ও সম্মান করতে হবে। আল্লাহর প্রিয় কাজ ও আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়ার উপায় ।
আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা ,মুসলিম বা অমুসলিম যা–ই হোক না কেন— দয়া ও বিনয়–নম্রতায় পরিপূর্ণ অতি উচ্চমানের সৌজন্যমূলক আচরণ করতে হবে। মিথ্যা না বলা, মিথ্যা সাক্ষ্য না দেওয়া শিরক না করা ,অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা না করা ,রক্তের সম্পর্ক বজায় রাখা , জাকাত দেওয়া , বিধবা, এতিম, গরিব ও দুস্থদের ভরণপোষণের চেষ্টা করা এবং তাদের সাহায্য করা , কাউকে গালি ও অভিশাপ না দেওয়া , একই রকমের ভুল কাজ দ্বিতীয়বার না করা ইত্যাদি আল্লাহর প্রিয় কাজ এই সকল কাজগুলো করলে আল্লাহতালা খুব খুশি হন।
আল্লাহর অলি হওয়ার উপায়
শরিয়ত ও তরিকত উভয়ই পালন করে যিনি মারিফত ও হকিকত লাভ করেন, তিনিই হচ্ছেন যথার্থ অলি। যিনি মন থেকে আল্লাহকে ভয় করে এবং আল্লাহর উপদেশ-উপদেশ যথাযথভাবে মেনে চলেন, তিনিই হলেন অলি। কিছু কিছু সময় আল্লাহর দয়ায় তাঁর কেরামত প্রকাশ পায়, যদিও তিনি তা গোপন রাখতেই সচেষ্ট থাকেন। অলি হওয়ার জন্য সর্বপ্রথম ঈমান আনতে হবে ও ঈমান মানতে হবে।
তাকওয়া অবলম্বন করতে হবে , তাকওয়া প্রধান দিক হলো হারাম কে বর্জন করা। আল্লাহর সকল আদেশ এবং নিষেধ পালন ও যাবতীয় নিষিদ্ধ বিষয় বর্জন করার নামই তাকওয়া। ওলি হওয়ার জন্য দু’টি শর্ত: বিশুদ্ধ ইমান এবং তাকওয়া বা যথার্থ আল্লাহভীতি, যা তাকে গোনাহ থেকে বাঁচিয়ে রাখে। এই গুণগুলো পালন করলে আল্লাহর অলি হওয়া যাবে। আল্লাহর অলি হওয়ার উপায় এর মধ্যে এই গুণগুলো থাকতেই হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url